আমাদের সেবামূলক কার্যক্রম
শিক্ষা সেবা
বিভিন্ন শিক্ষা কর্মসূচি এবং কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নত করা।
চিকিৎসা সেবা
স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা সহায়তার মাধ্যমে মানুষের সুস্থতা নিশ্চিত করা।
আর্থিক অনুদান/বিধবা মায়েদের ভাতা
দরিদ্র এবং বিধবা মায়েদের জন্য অর্থনৈতিক সহায়তা এবং ভাতা প্রদান।
সামাজিক দায়বদ্ধতা/নারী উন্নয়ন
নারীর ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ।
প্রশিক্ষণ/সেমিনার
বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং সেমিনারের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি ও জ্ঞান অর্জনের সুযোগ প্রদান।
গৃহ নির্মাণ প্রকল্প
গৃহহীন পরিবার এবং বিশেষত মহিলা ও শিশুদের জন্য আশ্রয়স্থল নির্মাণ ও সরবরাহ।
আধ্যাত্মিক সেবা
আধ্যাত্মিক শান্তি ও উন্নয়নের জন্য ধর্মীয় কর্মকাণ্ড।
পানীয় জল এবং স্যানিটেশন প্রকল্প
নিরাপদ পানীয় জল ও স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন নিশ্চিত করা।
ধর্মীয় চর্চা ও মানসিক উৎকর্ষতা
মানসিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য ধর্মীয় অনুশীলন।
আমাদের উদ্দেশ্য ও দর্শন
পৃথিবীতে যখনই প্রয়োজন হয়েছে, তখনই আমাদের সনাতন ধর্মের ভাবধারা মানবকল্যাণের উদ্দেশ্যে পুরো জগৎকে প্লাবিত করেছে এবং আধ্যাত্মিকতা দিয়ে মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখিয়েছে। স্বামী বিবেকানন্দ ও বার বার আমাদের সেই আধ্যাত্মিকতার ওপর নির্ভর করে অসহায় মানুষকে উদ্ধার করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। প্রাচীন উপনিষদের চিরন্তন সত্যগুলোকে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ, মা সারদা দেবী ও স্বামী বিবেকানন্দ আমাদের কাছে অত্যন্ত সরল ভাবে তুলে ধরেছেন তাদের জীবনের মাধ্যমে। সেই সত্যগুলোকে আধার করে রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম, উত্তর রোয়াইল মানবজাতির কল্যাণের জন্য প্রাণপণ কাজ করে যাচ্ছে। আমরা শিবজ্ঞানে জীবসেবার আদর্শকে অবিচলভাবে অনুসরণ করে সমাজের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।
পূজনীয় সন্ন্যাসীদের পদার্পণ
উল্লেখযোগ্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ
বিবৃতি
সকলকে আমার প্রণাম। আমি উত্তর রোয়াইল রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম পরিচালিত সারদা-নিবেদিতা শিশু নিকেতনের একজন বিদ্যার্থী। এখানে আমরা ধর্মীয় ও নৈতিক জ্ঞান লাভ করছি। পাশাপাশি এখানে আমরা স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাদ্য, স্কুলব্যাগ, জুতা-মৌজা, ইউনিফর্ম ও জ্যাকেট পেয়ে থাকি। এছাড়া আশ্রম থেকে আমাকে বিবেকানন্দ শিক্ষা বৃত্তি দেওয়া হয়। এর জন্য এই আশ্রম এর কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ।
রুপা সূত্রধর
আমার স্বামী ৮ বছর আগে ইহধাম ত্যাগ করেছেন। আমার আয়ের কোনো পথ ছিল না। আশ্রম আমাকে নতুন ঘর তুলে দিয়েছেন, আশ্রম থেকে আমি প্রতিমাসে বিধবা ভাতা পেয়ে থাকি, পাশাপাশি আমার ৯ম শ্রেণীর পড়ুয়া ছেলে বিবেকানন্দ বৃত্তি পেয়ে থাকে। আশ্রম আমার পাশে না দাঁড়ালে আমার সংসার চালানো অসম্ভব ছিল। আমি বড়ই ভাগ্যবতী এবং এই আশ্রমের কাছে ঋণী।
যমুনা সূত্রধর
আমার স্বামী ৪ বছর পূর্বে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। স্বামী মারা যাওয়ার পর আমার ছোট দুটি মেয়েকে নিয়ে দুবেলা দুমুঠো খাওয়াই কষ্টকর হচ্ছিল। মেয়েদের পড়াশোনার খরচ যোগানো অসম্ভব হয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় উত্তর রোয়াইল রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম আমাকে দুটো ছাগল দিয়ে আয়ের পথ প্রশস্থ করে দেয়। গত ৪ বছরে এই ছাগলের বাচ্চা বিক্রি করেই আমরা দুবেলা খেতে পারছি ও মেয়েদের পড়াশোনা চলছে। পাশাপাশি আমি মাসে মাসে বিধবা ভাতা ও আমার বড় মেয়ে আশ্রম থেকে বিবেকানন্দ বৃত্তি পাচ্ছে।
সুমি বিশ্বাস
আমি মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। উত্তর রোয়াইল রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম নারী শিক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাই স্বামী স্বাহানন্দ ফ্রী কোচিং সেন্টার চালু করেছে। এই ফ্রী কোচিং সেন্টারে ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সবাই ফ্রী ক্লাস করতে পারে। তাছাড়া এই আশ্রম বাল্যবিবাহ রোধেও কাজ করছে। ২০২২ সালে আমার অমতেই আমার বিয়ে ঠিক করা হয়, পরবর্তীতে ২০২২ সালেই আমি এই আশ্রমের কোচিং সেন্টারে ক্লাস শুরু করি। শিক্ষকদের সহযোগিতায় আমি এস এস সি তে এ+ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। আমি এই আশ্রম থেকে নিয়মিত বিবেকানন্দ শিক্ষা বৃত্তি পেয়ে থাকি। আমার স্বপ্ন একজন আদর্শ ডাক্তার হয়ে সাধারণ মানুষের সেবা করা।
স্বপ্না সূত্রধর
আমার একমাত্র মেয়ের ৭ বছর বয়সে হার্ট এর সমস্যা ধরা পড়ে। আশ্রম এর আর্থিক সহযোগিতায় অপারেশন করে আমার মেয়ে এখন ভালো আছে। এজন্যে এই প্রতিষ্ঠানের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি।
ঊষা সূত্রধর
আমার নাম নির্মল মণি দাস। আমার দুটি মেয়ে, বড় মেয়ে প্রতিবন্ধী ও ছোট মেয়ে ক্যান্সারে আক্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে দু বেলা দু মুঠো খেতে পারতাম না। আশ্রম আমার বড় মেয়েকে একটি হুইল চেয়ার দিয়েছে এবং ছোট মেয়ের ক্যান্সার এর চিকিৎসার খরচ বহন করছে ৪ বছর যাবৎ। এখন আমার ছোট মেয়ে আগের চেয়ে অনেক সুস্থ। আমি আশ্রমের কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকব।
নির্মল মণি দাস
রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম উত্তর রোয়াইল এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান উন্নত করা ও বাল্য বিবাহ রোধে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। একদিকে চলছে সারদা শিশু নিকেতনের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা, অন্যদিকে স্বহানন্দ ফ্রী কোচিং সেন্টার। আমি এই কোচিং সেন্টার থেকে পড়াশোনা করে সুফল পেয়েছি। পাশাপাশি আশ্রম থেকে আমি বিবেকানন্দ শিক্ষা বৃত্তি পেয়ে থাকি। এই আশ্রমের বিবেক মহারাজ, সকল শিক্ষক ও শ্রী প্রকাশ চক্রবর্তীর প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ। জয় ঠাকুর, জয় মা, জয় স্বামীজী।